মুন্সীগঞ্জে পোশাক কারখানার বর্জ্য থেকে তৈরি হচ্ছে রঙ-বেরঙের সুতা
মুন্সীগঞ্জে পোশাক কারখানা থেকে ফেলে দেয়া পলিথিন, নানা রকম প্লাস্টিকের মোড়ক বা বর্জ্য রিসাইক্লিং করে তৈরি করা হচ্ছে রং বেরঙের সুতা। সেই সুতা পাকিয়ে তৈরি করা হচ্ছে নাইলনের দড়ি। খোলা মাঠেই যেন কারখানা। পাকানো হচ্ছে সুতা। ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে এ ব্যস্ততা। প্রতিটি সুতার কলে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ কেজি রশি তৈরি হয়। পোশাক কারখানা থেকে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকের বস্তা এবং নানা রকম প্ল্যাস্টিকের মোড়ক তথা বর্জ্য রিসাইক্লিং করে তৈরি করা হয় রঙ-বেরঙের সুতা। সেই সুতা পাকিয়ে তৈরি করা হয় নাইলনের দড়ি। মুন্সীগঞ্জের পঞ্চসারে খোলা মাঠে সুতার কলগুলোতে বিশাল কর্মযজ্ঞ। উৎপাদিত পণ্য ভারত ও নেপালসহ নানা দেশে রপ্তানি হচ্ছে। জেলায় বর্জ্য রিসাইক্লিং করে সুতা তৈরির কারখানার সংখ্যা মোট ২৫টি। সুতার কলের কর্মীরা জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই রশি রপ্তানি করা হচ্ছে। তবে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি হয় ভারতে। প্লাস্টিকের এই বর্জ্যগুলো পরিবেশ দূষণ করতো। মাটি, নদী, খাল-বিলের সর্বনাশের পরিবর্তে অবদান রাখছে উৎপাদন খাতে। সেই বর্জ্যকেই একমাত্র কাঁচমাল হিসাবে ব্যবহার করা হয় এসব কারখানায়। কাটার মেশিনে কাটা হয় বর্জ্য। রোদে শুকিয়ে তারপর মেশিনে গলিয়ে তৈরি করা হয় চাপটি। গরম চাপটি পানিতে ডুবিয়ে ঠান্ডা করে আরেক মেশিনে ছোট ছোট দানা করা হয়। এই দানার সঙ্গে পছন্দের রং দিয়ে মিকশ্চার মেশিনে শুকানো হয়। এরপর 'প্লাস্টিক স্টুটার' মেশিনে তৈরি হয় সুতা। এসব কারখানার শ্রমিকরা তাদের মজুরি কম বলে দাবি করলে মালিকরা বলছেন ভিন্ন কথা। মুন্সীগঞ্জের পঞ্চসার দুর্গাবাড়ি এলাকা অবস্থিত সেফালী এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধিকারী আব্দুর রশিদ সরদার বলেন, শ্রমিকের মজুরি, কারখারনার ভাড়াসহ অন্যন্য খরচ বাদ দিলে তাদের দিনে পাঁচ-ছয়শ’ টাকার মতো লাভ থাকে। এই শিল্প বহুমুখী অবদান রাখছে। তাই সরকারিভাবেও তাদের পৃষ্ঠপোষকতা করার বিষয়টি ভাবা হচ্ছে। মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হামিদুর রহমান বলেন, তাদের এই কাজটি অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের পাশে থাকব এবং যতটুকু সহযোগিতা করা যায় আমরা তা করব।